শাহেদ মিজান, সিবিএন:
পাসপোর্ট দালাল ও রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট করা ঠেকাতে কঠোর হতে নির্দেশ দিলেন বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান। কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যাললের উপ-পরিচালক আবু নাঈম মো. মাসুককে এই নির্দেশ দেন তিনি। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় পরিদর্শনকালে এই নির্দেশ দেন।

মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী পাসপোর্ট করে বিদেশ পাড়ি দেয়ার অপচেষ্টা করছে। এই জন্য ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করার তোড়জোড় করছে তারা। তাদের এই অপচেষ্টা ঠেকাতে অত্যন্ত কঠোর হতে হবে। এই জন্য যত কঠোরতা দরকার সব ধরণের কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। মূল কথা, কোনো ভাবেই রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পেতে পারবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘যত প্রভাবশালীর সুপারিশ থাকুক না কেন, কোনো ফাইল সন্দেহ হলেই তা আবার যাচাই করতে হবে। যাচাই করে রোহিঙ্গা প্রমাণ হলেই বা বাতিল করতে হবে। এই জন্য চাপ আসলে সব ধরণের আমি ফেস করবো।’ এই ব্যাপারে তিনি পুলিশের ডিএসবি শাখাকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কিছু চক্র পাসপোর্ট কার্যালয়ে ঘিরে অপকর্মের ফাঁদ পেতে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব দালালরা পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অর্জনকে নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই পুরো দেশের পাসপোর্ট কার্যালয়গুলোকে দালালমুক্ত করা হচ্ছে। কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়কেও দালালমুক্ত করতে হবে। দালালদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নয়।’

তিনি আরো বলেন, পাসপোর্ট ডেলিভারি হলে যার পাসপোর্ট তাকেই নিতে আসতে হবে। একজনের পাসপোর্ট অন্যজনকে ডেলিভারি দেয়া যাবে। যদি দেয়া হয় তাহলে পাসপোর্ট কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শাস্তি আওতায় আনা হবে।

পরিদর্শনকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ রেজওয়ান সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাসপোর্ট কার্যালয়ের সেবা ও পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চান। এসময় সাংবাদিকেরা মৌলভী আজিজ, শাহাব উদ্দীনসহ বিভিন্ন দালাল ও পাসপোর্ট কার্যালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পর্কে বলেন। এময় ‘পাসপোর্ট ফরম লিখক সমিতি’ সম্পর্কেও সাংবাদিকেরা ডিজিকে অবহিত করেন।

এসময় কঠোর ভাষায় তিনি বলেন, ‘এই রকম কোনো সংগঠনের অস্থিত্ব নেই। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলবো।’ এই জন্য তিনি কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়ে অফিসের মোবাইল না আনার নির্দেশ দেন।

পরিদর্শনকালে মেজর জেনারেল মো. মাসুদ রেজওয়ান পাসপোর্ট আবেদন করতে আসা গ্রাহকদের সাথে কথা বলেন। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু নোমান মো. জাকির হোসেন।